Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
দেশে প্রায়োগিক সাক্ষরতা ৬৩ শতাংশ
বিস্তারিত

দেশে প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার ৬২ দশমিক ৯২ শতাংশ। ৭ বছর বা তদূর্ধ্ব বাংলাদেশি নাগরিকদের এ হার হিসাব করা হয়েছে। যিনি পড়তে, অনুধাবন করতে, মৌখিক ও লিখিতভাবে বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করতে, যোগাযোগ স্থাপন করতে এবং গণনা করতে পারেন, তাকেই প্রায়োগিক সাক্ষরতার আওতায় হিসাব করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রায়োগিক সাক্ষরতা নিরূপণ জরিপ ২০২৩-এর ফলাফলে উঠে এসেছে এসব তথ্য। প্রতিবেদনটি গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান।


২০২৩ সালের জরিপ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাত বছর থেকে ওপরের বয়সীদের প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষের ৬৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং মহিলার হার ৬১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। পল্লী এলাকায় এ হার ৫৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৫৯ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং মহিলা ৫৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। শহর এলাকায় প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৭১ দশমিক ৯৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৭৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং মহিলা ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ।

প্রতিবেদনে স্তরভিত্তিক সাক্ষরতার হার তুলে ধরা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সাত বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে সাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন নয়, এমন মানুষ রয়েছে ২৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। এ ছাড়া আংশিক সাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন লোক রয়েছে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। প্রাথমিক পর্যায়ের সাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ রয়েছে ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং উন্নত পর্যায়ের সাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন লোক রয়েছে ৪৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশে ৭ থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এ ছাড়া এই বয়সীদের মধ্যে প্রায়োগিক সাক্ষরতার দক্ষতাভিত্তিক হার পঠন বা শুধু পাঠ করায় দক্ষ মানুষের সংখ্যা ৫৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। লেখার ক্ষেত্রে দক্ষতা বেশি আছে এমন মানুষ ৬৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গাণিতিক হিসাবে দক্ষ মানুষ ৫৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং উপলব্ধিগত দক্ষতা আছে ৫৬ দশমিক ০৮ শতাংশ।

এদিকে দেশে এখন প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার ১১-৪৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। যেটি ২০১১ সালে ছিল ৫৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত ১৩ বছরে এ হার বেড়েছে ১৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এ বয়সী পুরুষদের মধ্যে বর্তমানে প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ১০ এবং নারীদের ৭৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায়োগিক সাক্ষরতা নিরূপণের ক্ষেত্রে এ জরিপটি ব্যতিক্রম। কারণ এর মাধ্যমে সাক্ষরতার হার যাচাইয়ে নির্বাচিত প্রত্যেক ব্যক্তির ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ন্যূনতম ৫০ নম্বর পেলে প্রায়োগিক সাক্ষর বলে ধরা হয়। ৭-১৫ বছর এবং ১৫ থেকে অনূর্ধ্ব এ দুটি বয়সের ক্যাটাগরিতে আলাদা প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে জরিপ করা হয়েছে। জরিপ পরিচালনা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে গত জুন পর্যন্ত। দেশের ৬৫ জেলার ৪ হাজার ৯৬টি প্রাইমারি স্যাম্পল এরিয়া বা পিএসইউ থেকে ৮১ হাজার ৯২০টি পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতি পিএসইউতে ২০টি করে খানা বা পরিবার ধরা হয়েছে। এ কাজে গণনাকারী ছিলেন ১ হাজার ২৪ জন। এর আগে ২০০৮ এবং ২০১১ সালে দুটি জরিপ পরিচালনা করা হয়েছিল।

বিবিএসের প্রতিবেদনে ১১ থেকে ৪৫ বছর বয়সী মানুষদের মধ্যে বয়সভিত্তিক প্রায়োগিক সাক্ষরতার হারের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার ২০২৩ সালের জরিপে পাওয়া গেছে ৮৮ দশমিক ০২ শতাংশ, যা ২০১১ সালের জরিপে ছিল ৭১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া ১৬-২০ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার ৮৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা আগের জরিপে ছিল ৬৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। ২১-২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার ৮২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যা ২০১১ সালের জরিপে ছিল ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। ২৬-৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা আগের জরিপে ছিল ৫০ দশমিক ৫০ শতাংশ। ৩১-৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৬৭ দশমিক ৮১ শতাংশ, যা আগের জরিপে ছিল ৪৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। ৩৬-৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ, যা আগে ছিল ৩৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ ছাড়া ৪১ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যা ২০১১ সালের জরিপে ছিল ৩৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। এসব তথ্যে দেখা যায়, প্রত্যেক বয়সী মানুষের মধ্যে প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার বেড়েছে।

অনুষ্ঠানের পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, একটি ভালো বিষয় হচ্ছে বিবিএসের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। উপবৃত্তি দেওয়ার কারণে সাত থেকে চৌদ্দ বছর বয়সী মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়ে ৭৬ শতাংশ হয়েছে। যেখানে ছেলেদের এ হার ৬৯ শতাংশ। তিনি কীভাবে সাক্ষরতা বাড়ে তা নিয়ে আরও একটি জরিপ করার পরামর্শ দেন।

অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, এ জরিপটি জুন মাসের মধ্যে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। আমরা সেভাবেই কাজ করেছি। তবে এ প্রকল্পটির যিনি পরিচালক ছিলেন তিনি মারা গেছেন। তাই আরেকজনকে দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
18/07/2023
আর্কাইভ তারিখ
31/12/2023